কাউনিয়ায় সেবাবঞ্চিত রোগীরা: ইচ্ছামত খোলা হয় কমিউনিটি ক্লিনিক

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

কাগজে-কলমে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকার কথা থাকলেও রংপুরের কাউনিয়ায় এর বাস্তব চিত্র ভিন্ন। উপজেলায় প্রায় প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চলে মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এতে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এছাড়া ২৭ প্রকারের ঔষধ দেয়ার কথা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে ৩/৪ প্রকার, এতে ক্ষুব্ধ সেবা গ্রহীতারা। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে এ অবস্থায় চলছে বলে অভিযোগ সেবা গ্রহীতাদের। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রাম পর্যায়ে টিকা দান, পরিবার পরিকল্পনা, জন্মনিয়ন্ত্রণ, মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা দেওয়ার কথা কিন্তু কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের দায়িত্বে অবহেলা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার তদারকির অভাবে গ্রামের বৃহৎ জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জানা গেছে, দূরত্ব বুঝে প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ছয় হাজার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা। কিন্তু মানুষ পাচ্ছে না মানসম্মত চিকিৎসাসেবা। এছারাও প্রতিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারী থাকার কথা। তবে বেশির ভাগ ক্লিনিকেই নেই। যেখানে আছেন তারাও সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই দিন আসেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। উপজেলায় ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের বেশির ভাগই বেহাল দশা। ক্লিনিকে আসা হাজেরা বেগম বলেন, নামেই ক্লিনিক প্রয়োজনের সময় সেবা পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ সময়ই থাকে বন্ধ। ২৭ ধরনের ওষুধের কথা বলা হলেও পাওয়া যায় দুই তিন প্রকার ওষুধ। রাবেয়া বেগম বলেন, মাঝে মধ্যে সেবা নিতে আসি, আসলেই বলে ঔষধ নাই, শেষ হয়ে গেছে। তাহলে ঔষধ গুলো যায় কোথায়? স্থানীয়দের অভিযোগ কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা সপ্তাহে ২/৩ দিনের বেশি ক্লিনিকে আসেন না যদিও আসেন ১১টায় চলে যার ১ টার মধ্যে। অনিয়ম ও অযত্ন-অবহেলায় চলছে ক্লিনিকগুলোর কার্যক্রম। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যেন নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সুজয় সাহা জানান, এ রকম অভিযোগ পেয়েছি মাঝখানে ৩/৪ জনকে কারণ দর্শনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রুটিন অনুযায়ী ভিজিটে আমি যাই। পরবর্তীতে গাফলতির কোন অভিযোগ আসেনি, যদি কোন অভিযোগ আসে তাহলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।