দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরে এবারের ঈদে চামড়ার বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। নামমাত্র মূল্যে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। অনেকে ছাগলের চামড়ার দাম না পেয়ে নদীসহ বিভিন্ন স্থানে ফেলছেন। তবে জেলায় কয়েকজন কিছু ছাগলের চামড়া কিনেছেন। তবে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় একটি চামড়া এক কাপ চায়ের দামে অর্থ্যাৎ ৫-১০টাকায় বিক্রয় হয়েছে।
অন্যদিকে দিনাজপুরের রামনগরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে না পেরে রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যান। এতে রামনগর বাজার এলাকার রাস্তার দুই ধারে চামড়ার স্তূপ হয়ে যায়। রামনগর বাজার এলাকা কঁাচা চামড়ার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ঈদের পর তৃতীয় দিন সোমবার থেকে পৌরসভার পড়ে থাকা চামড়া তুলে নিয়ে রাস্তা পরিস্কারের কাজ শুরু করে।
দিনাজপুরের চামড়া বাজার রামনগরে, ফুলবাড়ীর নিমতলা মোড়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া বিক্রি করতে লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু কাঙ্খিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়েছেন তারা। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, সবধরনের পশুর চামড়া কেনা হলেও খরচ বেশী হওয়ায় ছাগলের চামড়া কেউ কিনতে চায় না। কারন হিসেবে তারা বলছেন, একটি ছাগলের চামড়ায় সংরক্ষনে লবন ও শ্রমিক খরচ পরে ৫৫টাকা।লবনের মুল্য হিসাব না করে চামড়া কিনলে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হয়।
চামড়া বিক্রি করতে আসা মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, সরকার একটি দাম নির্ধারণ করে দিলেও সরকারের দাম শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ, বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। চামড়ার বাজার আগেও যা ছিল এবারও তাই আছে। একটি গরুর চামড়া আর একটি ছাগলের চামড়া এনেছিলাম। গরুর চামড়া বিক্রি করলেও ছাগলের চামড়ার দাম নেই, তাই নদীতে ফেলেছি।
ট্যানারির মালিকদের দোষারোপ করে চামড়া ব্যবসায়ী কোরবান আলী বলেন, তারা সরকারি দামে না কেনায় আমরাও কিনতে পারছি না। আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় চামড়া কিনছি। ছাগলের চামড়া নিচ্ছি ১০টাকায়। ট্যানারির মালিকেরা ছাগলের চামড়া নিতে চায় না। এ জন্য দাম নেই। অন্য দিকে কোরবানি উপলক্ষে বেড়েছে লবণের দাম। আগে প্রতি মণ লবণ ৪৭০ টাকা থাকলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। তিনি আরও জানান, গত বছর সরকারি দামে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছিলেন। অনেক চামড়া নদীতে ফেলে দিতে হয়েছে। তাই এবার ২০০ গরুর চামড়া কিনেছেন।
দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের আহবায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকারী মুল্য অনুযায়ী কিনে লবন,শ্রমিক খরচসহ সংরক্ষন করে বিক্রি পর্যন্ত প্রতিটি গরুর চামড়ায় খরচ হয় ২৫০টাটা থেকে ৩০০টাকা। লবনের দাম বেশী, শ্রমিক খরচও বেশী এরপরেও ট্যানারীদের কাছে চামড়া বিক্রির পর টাকা থাকে বকেয়া।দিন দিন তাই এ ব্যবসায় ধস নামছে। ব্যবসায়ীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।
দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের আহবায়ক আকতার আজিজ বলেন, ট্যানারীদের কাছে পূর্বের পাওনা বাদে গত ঈদ থেকে আজ এ ঈদের পূর্ব পর্যন্ত ২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বর্তমানে ব্যবসায়ী রয়েছেন মাত্র ২০জন। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করি, যাতে চামড়া শিল্পের গৌরব ফিরে আসে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ রফিকুল ইসলাম লাভলু। উপদেষ্টা : প্রবাসী সুমন চন্দ্র। নির্বাহী সম্পাদক মোঃ তাজরুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক মোঃ জাহিদ হাসান মানছুর। ঢাকা অফিস : আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
যোগাযোগের ঠিকানা:-পীরগাছা, রংপুর। বার্তা কার্যালয়ঃ পাইকগাছা, খুলনা। মোবাইল: ০১৭১৭-৪৬৫০১০ ( সম্পাদক), ০১৭২৮-১০৩৫০৭ (নির্বাহী সম্পাদক