
মিজানুর রহমান মিন্টু, পঞ্চগড় প্রতিনিধি।
পঞ্চগড়ে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন শিশুস্বর্গের উদ্যোগে, এসিআই ফ্রীডম এর সহযোগিতায় স্কুল ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল ) পঞ্চগড়ের দেওয়ানহাট দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৫ শত শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে এই স্যানেটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়। এবং মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
বিতরণ অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বসির আলমের সভাপতিত্বে এবং শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন পঞ্চগড়ের প্রেসিডেন্ট মুরাদ হাসানের সঞ্চালনায়
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব শাহনাজ সিগমা, বক্তব্য রাখেন সদর হাসপাতালের ইন্টার্ন নার্স নাজমিন আক্তার ইভা,
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো: তানভীরুজ্জামান রনি অডিট অফিসার, হাইজিন প্রোডাক্ট,এ সি আই কোম্পানী লিমিটেড। আরো উপস্থিত ছিলেন শিশুস্বর্গের পঞ্চগড়ের জেনারেল সেক্রেটারী সাখাওয়াত উল্লাহ শাহীন সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ শিক্ষকসহ প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রত্যেক নারীর পিরিয়ড স্বাভাবিক জীবনচক্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি নিয়ে এখনো আমাদের দেশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি স্বাভাবিক নয়। তবে বর্তমানে সচেতনতা কিছুটা বাড়লেও দারিদ্রতার কারণে এখনও বহু নারী মানসম্মত স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারছেন না। শিশুস্বর্গের এ কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসাজনক।
উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন ,শিশুস্বর্গের এমন আয়োজন সত্যিই অসাধারন। আমরা শিশুস্বর্গের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব শাহনাজ সিগমা আপার কাছ থেকে মেয়েদের পিরিয়ড হলে কি কি করণীয় তা জানতে পারলাম।
শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক কবীর আহমেদ আকন্দ এই উদ্যোগের কথা ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। তিনি আরো বলেন সীমান্ত জনপদের দরিদ্র পীড়িত পরিবারের মেয়েরা মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নয়। সামাজিক লজ্জায় অনেক কিছু গোপন করে। সামান্য একটু অসচেতনতার কারণে শরীরে বড় বড় রোগের বাসা বাধে। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বাল্য বিয়ে নিরুৎসাহিত করন এবং মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনা কার্যক্রম বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শুরু হলো এই কার্যক্রম চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ।
কবির আকন্দ আরও বলেন, ‘ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮’ অনুযায়ী, দেশে মাসিকের সময় ৪৩ শতাংশ কিশোরী ডিসপোজিবল প্যাড, ৫০ শতাংশ পুরোনো কাপড় এবং বাকিরা নতুন কাপড় ও তুলা ব্যবহার করে। ভালো মানের প্যাড ব্যবহারে একজন কিশোরীর মাসে ১শ টাকার মতো লাগে। গ্রাম অঞ্চলের অনেক নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য মানসম্মত স্যানিটারি প্যাড অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য। এক্ষেত্রে শিশুস্বর্গের মাধ্যমে আমরা স্কুলে স্কুলে মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিরাপদ স্যানিটারি প্যাড পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যে আমরা এ উপজেলায় চারটি বিদ্যালয়ে সহ নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে।
এসময় ব্যাল্য বিবাহ এবং আত্মহত্যা কে না বলবো, এবং ব্যাল বিবাহ ও আত্মহত্যাকে লাল কার্ড প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সীমান্তের অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে শিশুস্বর্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের অর্থায়নে। সীমান্তের অবহেলিত, হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষাবৃত্তি, শিক্ষা উপকরণসহ শীতবস্ত্র, ঈদবস্ত্র, বেকার যুবক, নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি করে আসছে স্বেচ্ছাসেবী এ শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।