নাঈম, কুমিল্লা ক্যাম্পাস প্রতিনিধি:কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) রমজানে সেমিস্টার, মিড, প্রেজেন্টেশন, ভাইবা চালু থাকায় শিক্ষার্থীরা অনীহা প্রকাশ করছে।
গত ২ মার্চ থেকে মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজান মাস শুরু হয়েছে। এই মাস মুসলমানদের জন্য ইবাদত, আত্মশুদ্ধি ও নিজেকে সময় দেওয়ার মাস বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এই মাসে অ্যাকাডেমিক চাপ থাকায় রমজান মাসের ফজিলতকে প্রাধান্য দিতে পারছেন না বলে জানান তাঁরা। অনেকে আবার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও রমজানে বন্ধ রাখার দাবি জানান।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন । তাদের মতে, রোজা রাখার ফলে শরীর ক্লান্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। যার ফলে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। তাছাড়াও ক্লাস এবং পরীক্ষার জন্য ইবাদতে সঠিকভাবে সময় দেওয়া যাচ্ছে না। তারা রমজান মাসে ক্লাস ও পরীক্ষার চাপ কমানো এবং ইবাদত ও শিক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে পবিত্র মাহে রমজান মাস পালন করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশাসনকে অনুরোধ জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি বিভাগের কোনো না কোনো ব্যাচে সেমিস্টার, প্রেজেন্টেশন চলমান রয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়েছে। সে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য এই পরীক্ষাগুলো নেওয়া হচ্ছে, যেন সেশন জট না হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীমুল ইসলাম বলেন, ক্লাস এবং পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তটি আসলে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। যেহেতু বিভিন্ন কারণে গত কিছুদিন ক্লাস বন্ধ ছিলো তাই সেমিস্টারের ক্ষেত্রে কিছু সেশন জট হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এই জট গুলো থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য রমজানে সেমিস্টার চলমান রেখেছি। আমরা জানি রমজান ইবাদতের মাস সেমিস্টারের কারণে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত চাপ নিতে হচ্ছে। সীমাবদ্ধতা সবসময় থাকে এখন এই পরিস্থিতিতে এর বাইরে বিকল্প কোনো চিন্তার সুযোগ আমাদের নেই।
ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শেখ মকসেদুর রহমান বলেন, আমরা সেশন জট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ চাই। আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন সঠিক সময়ে ডিগ্রি নিয়ে বের হতে পারে এইজন্য পরীক্ষা নিচ্ছি। যেহেতু রমজান মাসে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা আছে তাই পরীক্ষাগুলো হচ্ছে। যদি রমজানের কথা চিন্তা করে পরীক্ষা না নেওয়া হতো তাহলে তারা অনেক পিছিয়ে পড়তো। রমজানের কারণে যে পরীক্ষার ক্ষতি হবে এইটা আমি মনে করি না। রমজানে ক্লাস, পরীক্ষা দেওয়া যাবে না এইটা একটা সনাতন ধারণা।
প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড, মাসুদা কামাল বলেন, রমজান মাসে অন্য বছরের মতো এই বছরেও ক্লাস-পরীক্ষা চলছে। কর্তৃপক্ষ যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রেখেছে সে হিসেবে যাদের এক্সাম আছে সব এক্সাম হবে।